হযরত মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল কাদের সিদ্দিকী (রহ.)
মুজাহিদে মিল্লাত, হযরত মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল কাদের সিদ্দিকী (সেজ হযুর) মোজাদ্দেদে জামান (রহ.)-এর তৃতীয় সাহেবজাদা। তিনি অনুমান বাংলা ১৩১৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকাল থেকে তীক্ষ্ম মেধাবী ও তেজস্বীরূপে খ্যাত ছিলেন।
প্রাথমিক শিক্ষা শেষে তিনি কলকাতার তৎকালীন নামকরা দীনি প্রতিষ্ঠান মাদ্রাসা রমজানীয়া (চুনাগলি, বর্তমান মেডিকেল কলেজের দক্ষিণ পার্শ্ব) থেকে অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে ফারেগ (উত্তীর্ণ) হন। অতঃপর তিনি মোজাদ্দেদে জামান (রহ.)-এর খেদমতে থেকে যথারীতে তালীম পেতে থাকেন এবং খিলাফত হাসিল করেন। মোজাদ্দেদে জামান (রহ.)-এর সাথে সফরে সর্বদা ছায়ার মত থাকতেন। তিনি তেজস্বী আলেম ও বক্তা ছিলেন। রাজনীতিতে তাঁর গভীর জ্ঞান ছিল।
তিনি জমিয়তে ওলামা বাংলা ও আসামের সেক্রেটারী রূপে কৃতিত্বের ছাপ রেখে গেছেন। পত্র-পত্রিকায় সুন্দর প্রবন্ধ লিখতেন। রাজনৈতিক পটভূমিকায় সমাজে তার মতামতের যথেষ্ঠ গুরুত্ব ছিল। এমনকি জটিল সমস্যা সমাধানে তাঁর মতামতের প্রতি সমাজ তাকিয়ে থাকত। তৎপ্রণীত কিতাবের মধ্যে ওযিফা ও মুরাকাবা, পাক-নাপাকের মাসআলা, বিবি ও শওহরের নসিহত, মহররম কাহিনী, শেরখানীর ফতোয়া প্রভৃতি খ্যাতি অর্জন করে। তিনি মোজাদ্দেদে জামান (রহ.)-এর দ্বিতীয় বাড়ি সীতাপুরে অবস্থান করতেন। তিনি মোজাদ্দেদে জামান (রহ.) এর খেদমতে নিবেদিত ছিলেন, এমনকি নতুন বিয়ে করেও ঘর-সংসারে তাঁর আদৌ আগ্রহ ছিল না। এক সময় মোজাদ্দেদে-জামান (রহ.) সেজ হুযূরকে সফর থেকে ঘরে কয়েকদিন থাকার জন্য পাঠিয়ে দেন ; ২/১ দিন যেতে না যেতেই তিনি আবার হুযূরের খেদমতে হাযির হয়ে যান।
মোজাদ্দেদে জামান (রহ.) একটু রাগান্বিত হয়ে বলেন- তোমাকে না আমি বাড়িতে থাকতে বলেছি, এতে সত্বর এল কেন? অশ্রুসজল নেত্রে তিনি নিবেদন করেন হুযূর আপনি যে আমার আব্বা ও পীর। আপনাকে না দেখে থাকতে পারি না। হুজুর সন্তুষ্ট হয়ে আর কিছুই বলেননি।
তিনি জবরদস্ত কাশফ শক্তিসম্পন্ন ওলি ছিলেন। অতি অল্প সময়ের মধ্যে খুবই খ্যাতি অর্জন করেন। হযরত নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বহুবার স্বপ্নে দেখেছেন। অধিকাংশ সময় ভালো স্বপ্ন দেখতেন। মোজাদ্দেদে জামান (রহ.) বলতেন, তার রূয়ায়ে সাদেকার মুকাম খুলে গেছে।