পরিচয়
এই ফুরফুরাতেই ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সিদ্দিকী বংশে জন্মগ্রহণ করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলেম ও পীর, আমীরুস্ শরিয়ত, মোজাদ্দেদে জামান হযরত মাওলানা আবু বকর সিদ্দিকী (রহ.)। তাঁর সময়কালকে ফুরফুরার স্বর্ণযুগ বলা যায়। তাঁর সময়ে ফুরফুরা বিশ্বব্যাপী হেদায়েতী কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। এ অঞ্চলে নতুন নতুন অনেক মাদ্রাসা, মসজিদ, খানকাহ ও অন্যান্য দীনি প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। পুরনো মাদ্রাসা, মসজিদ ও অন্যান্য দীনি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়। রাস্তাঘাট ও অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটে। দাতব্য হাসপাতাল, পোস্ট অফিস প্রতিষ্ঠা হয়। অসংখ্য ওয়াজ ও ইসালে সওয়াব মাহফিল প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে। শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়। শিক্ষিতের হার ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। পথ হারা মানুষ পথের দিশা পায়। পুরো অঞ্চলে ইসলামী ভাবধারা ও কৃষ্টি কালচারের ব্যাপক প্রচলন ও চর্চা শুরু হয়।
মোজাদ্দেদে জামান আবু বকর সিদ্দিকী (রহ.) এর হেদায়েতী তৎপরতা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়লে কোটি কোটি মানুষ হেদায়েত হয়। হাজার হাজার মসজিদ, মাদ্রাসা, খানকাহ, এতিমখানা, দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা হয়। তাঁর প্রায় ষাট হাজার খলিফার মাধ্যমে ফুরফুরার হক হেদায়েত পূর্বে চীন থেকে নিয়ে পশ্চিমে আফ্রিকার গহিন অরণ্য পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
অবস্থান
যেভাবে যাবেন
যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নয়নের ফলে ফুরফুরায় যাতায়াত এখন অত্যন্ত সহজ হয়ে গেছে। কলকাতার থেকে সরাসরি ফুরফুরা পর্যন্ত বাস সার্ভিস আছে। ট্যাক্সিক্যাব রিজার্ভ করেও যাওয়া যেতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে যেতে হলে ঢাকা থেকে সরাসরি কলকাতা পর্যন্ত বাস সার্ভিস আছে। ঢাকা হতে কলকাতা পর্যন্ত শ্যামলি, সোহাগ, গ্রীনলাইনসহ বিভিন্ন পরিবহনের এসি ননএসি বাস রাতদিন চলাচল করে। বর্তমানে ঢাকা থেকে সরাসরি কলকাতা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করছে।
কলকাতা থেকে শিয়াখালা হয়ে ফুরফুরা যেতে হয়। কলকাতা মনুমেন্টের নিকটস্থ বাস টার্মিনাল হতে অনেক বাস শিয়াখালা হয়ে বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। শিয়াখালা হতে ফুরফুরার দূরত্ব তিন মাইল। এ পথটুকু বাস, ট্যাকার, অটোরিক্সা বা রিক্সায় করে ফুরফুরা যেতে হয়। সময় ও খরচ কমাতে চাইলে বেনাপোল নেমে বর্ডার পার হয়ে কলকাতা না গিয়ে বনগা হয়ে বারাসাত থেকে ৮১ নং বাসে বেরাকপুরের ধূপিঘাটে নামতে হয়। তারপর নদী পার হয়ে ওপারে শ্রীরামপুর থেকে ৩১ নং বাসসহ অন্য যেকোন বাসে ফুরফুরা যাওয়া যায়। প্লেনে যেতে চাইলে দমদম এয়ারপোর্ট নেমে সরাসরি টেক্সিতে অথবা কলকাতা হয়ে বাসে ফুরফুরা যেতে হয়।